চ্যানেল এস ডেস্ক:
গানের বুলবুল আর দ্রোহ, সাম্য, প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী আজ। সৃষ্টিশীল এক অন্যন্য প্রতিভার নাম কাজী নজরুল ইসলাম।
বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার কবিতা কোটি তরুণের রক্তে জাগায় স্ফুলিঙ্গ। উপন্যাস, নাটক, সংগীত আর দর্শনে তার অনবদ্য উপস্থিতি বর্ণাঢ্য করেছে বাংলা সাহিত্যকে।
নজরুল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ খড়তাপের মধ্যেই ঝড়ের বেশে ক্ষণজন্মা এই প্রতিভার জন্ম অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে।
বাবা কাজী ফকির আহমেদ ছিলেন মসজিদের ইমাম আর মা জাহেদা খাতুন গৃহিণী। দরিদ্র পরিবারে জন্মের পর দুঃখ-দারিদ্র্য ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তার ডাকনাম ছিল দুখু মিয়া।
শৈশবেই বাবাকে হারিয়ে জীবিকার তাগিদে কখনো হয়েছেন লেটো দলের বাদক। কখনো রেল গার্ডের খানসামা। কখনো আবার রুটির দোকানের শ্রমিক। অগ্নিবিণাকে হাতিয়ার করে সৈনিক হিসেবে লড়েন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। সাহিত্যকে সঙ্গী করে সেনানিবাসে রচনা করেন ‘বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী’। এরপর থেকেই মানুষের হৃদয়ে আচর কাটে তাঁর তেজস্বী লেখনী।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন পথে। শাসকের রোষানলে পড়েছেন, হয়েছেন কারারুদ্ধ। আর এই সময়গুলোতেই তিনি কালি ও কলমে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছেন সাহিত্যসাধনায়।
শুধু সাহিত্য নয় তিন হাজারের অধিক গানের রচয়িতা নজরুল। আসানসোলের রুটি বানানো ছেলেটি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান। কয়েকটি চলচ্চিত্রে সুরকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি। এছাড়া নজরুল 'ধূপছায়া' নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি করেছেন অভিনয়ও।
১৯৭২ সালে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে কবিকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় বাংলাদেশে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই অবস্থান করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মৃত্যুঞ্জয়ী এই কবি যাত্রা করেন অসীমের পথে। তাঁর ইচ্ছানুসারেই তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে।
মন্তব্য করুনঃ