• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৬ই বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ০৭:৪৩:৪০ (19-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

নেপালের ‘ভয়ঙ্কর’ পর্বত চূড়ায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা


রবিবার ৬ই নভেম্বর ২০২২ দুপুর ০২:৫২



নেপালের ‘ভয়ঙ্কর’ পর্বত চূড়ায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা

ছবি : সংগৃহীত

নেপালের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাহাড়গুলোর একটি হলো মাউন্ট আমা দাবলাম। তবে বাংলাদেশি এক চিকিৎসকের সাহস ও ইচ্ছার কাছে হার মেনেছে মাউন্ট আমা দাবলাম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই ভয়ানক পাহাড় জয় করেছেন ডা. বাবর আলী।

মাউন্ট আমা দাবলামের উচ্চতা প্রায় ৬৯০০ মিটার বা ২২ হাজার ৫০০ ফুট। আমা দাবলাম অর্থ মায়ের গলার হার। দূর থেকে দেখতে যতো সুন্দরই হোক, এটিতে ওঠার জন্য পাড়ি দিতে হয় পৃথিবীর ভয়ঙ্কর পথগুলোর মধ্যে একটি। তবে সাহসিকতা দিয়ে এই পাহাড়কে হার মানিয়েছেন তরুণ চিকিৎসক ডা. বাবর আলী।

জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করছেন এই চিকিৎসক। তবে শুরু থেকেই তার স্বপ্ন ছিল উঁচু চূড়া ছোঁয়ার। এই পর্বত জয় করার জন্য তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন অন্তত এক বছর ধরে। তারই সূত্র ধরে তিনি জয় করেছেন মাউন্ট আমা দাবলাম।

মিশন শেষ করে কিছুদিন আগেই দেশে ফিরেছেন এই তরুণ চিকিৎসক। তিনি বলেন, দেখতে সুন্দর লাগলেও এর পাথর আর বরফের ফরমেশন পাহাড়টিকে ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। অনেক ক্ষেত্রে এটি অনেক ৮ হাজার মিটার পর্বতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। এর জন্য পাহাড়ে চড়ার খুব ভালো দক্ষতা প্রয়োজন। সেই সাথে লাগবে বরফে চলার যথেষ্ট সক্ষমতা। আমি নিজেকে প্রস্তুত করেছি অনেক দিন ধরেই। নিয়মিত ১০ কিলোমিটার দৌঁড়েছি আমি।

পুরো দশদিনের ট্রেকে বাবর আলীকে পাড়ি দিতে হয়েছে বিপদজ্জনক সব রাস্তা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ৮০-৯০ ডিগ্রি খাড়া দেয়ালের মতো পাথুরে পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতে হয়েছে তাকে। সামান্য ভুল হলেই সেখানে রয়েছে মৃত্যুঝুঁকি।

ডা. বাবর আলীর বর্ণনায় উঠে এসেছে সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আমি প্রথমে ক্যাম্প-১ এ পৌঁছাই, সেটা ৫ হাজার ৫০০ মিটার উচ্চতায়। পরের দিন ক্যাম্প-২ এ যাই, যেটা প্রায় ৬ হাজার উচ্চতায় রয়েছে। আমা দাবলামের সবচেয়ে বিপজ্জনক অংশকে বলা হয় ইয়োলো টাওয়ার, সেখানেই আমাদের ক্যাম্প-২ ছিল। প্রতিটি পর্বেই ফ্রস বাইট আর মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই চলতে হয়েছে। এবারই বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। একজন শেরপারও মৃত্যু ঘটেছে।

বাবরের মিশন আমা দাবালাম সফল হয় ২৫ অক্টোবর। তার আগেরদিন রাতভর তিনি পাথুরে দেয়াল ও পাহাড়ের রিজলাইন ধরে হেঁটেছেন। অবশেষে পাহাড়ের চূড়ায় দেশের পতাকা নিয়ে দাঁড়ানোর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেই আবেগেই আপ্লুত তিনি।

ডা. বাবর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণার কাজ করেন। পাশাপাশি পাহাড়ে ট্রেকিং ও ক্লাইম্বিং করাও তার নেশা। পর্বতারোহণ শুরুর আগে প্লাস্টিকের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরিতে ৬৪ দিনে দেশের ৬৪ জেলা পায়ে হেঁটে বেড়িয়েছেন বাবর। তরুণ-কিশোরদের ট্রেকিং, ক্লাইম্বিংয়ে উৎসাহ দিতে চট্টগ্রামে বন্ধুরা মিলে গড়ে তুলেছেন ভার্টিকাল ড্রিমার্স নামের একটি সংগঠন। তার গর্বে এখন গর্বিত বাংলাদেশও।

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ