মফস্বল ডেস্ক :
টাঙ্গাইলের ভোজদত্ত ও ঘাটাইল উপজেলার সীমান্তবর্তী ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠের বয়স প্রায় ২০০ বছর। তবে নামে ঈদগাহ হলেও গত ১২ বছর ধরে প্রতি ঈদেই এই ঈদগাহে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ফলে গত একযুগ ধরেই ঈদের দিন জনশূন্য থাকে এই ঈদগাহ।
মূলত, এই ঈদগাহের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল ঘাটাইল উপজেলার ভোজদত্ত ও কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে। এ বিরোধের জেরে হত্যার শিকার হন কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা গ্রামের আব্দুল গফুর নামে এক ব্যক্তি। এরপর থেকেই গত ১২ বছর ধরেই সংঘর্ষ এড়াতে ঈদের দিন ভোজদত্ত মাঠে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। এবারের ঈদেই জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দীন হায়দার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন।
জানা গেছে, ভোজদত্ত ঈদগাহের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ঘাটাইল উপজেলার ভোজদত্তসহ আশপাশের পাঁচটি গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় ২০১২ সালে। বিরোধ নিরসনে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর দুই উপজেলার তৎকালীন ইউএনওদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এই সংঘর্ষেই নিহত হন আব্দুল গফুর নামে ওই ব্যক্তি।
পরে এ বিষয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন গফুরের ছেলে মোস্তফা কামাল। মামলায় আসামি করা হয় ১৭ জনকে। পুলিশ আদালতে চার্জশিট পাঠান ১৩ জনের বিরুদ্ধে। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন আছে। ওই হত্যাকাণ্ডের পর দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়ে যায় এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয় দফায় দফায়। সেই বিরোধের নিরসন হয়নি এখনও।
এ অবস্থায় যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর ঈদুল আজহার দিন জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠের আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। এর পর থেকেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় ১২ বছর ধরে প্রত্যেক ঈদেই ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠে জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুসেইন বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরে এ ঈদগাহে ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুনঃ