আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকার কক্সবাজারের উন্নয়ন করেনি। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, ‘যে গ্রেনেড যুদ্ধের মাঠে ব্যবহার করা হয় সে গ্রেনেড মারা হয়েছিল আমাদের ওপর। আমাদের আইভি রহমানসহ অনেকে মারা গেছে। আল্লাহর রহমতে আমি সেদিন বেঁচে গিয়েছিলাম। ধ্বংস করা ছাড়া এরা (বিএনপি-জামায়াত) কিছু পারে না। ৭৫ এর পর এরা ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল। এরা কী দিয়েছে বাংলাদেশকে? জিয়া সরকার তো কিছুই দিতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত এদেশের মানুষকে কী দিয়েছে? অগ্নিসন্ত্রাস, মানি লন্ডারিং, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, খুন এবং লুটপাট ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। তারা ৩ হাজার মানুষ আগুনে পুড়িয়েছে। পাঁচ শ মানুষকে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা ১৮ তে নৌকায় ভোট দিয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এসেছি। টানা তিনবার ক্ষমতায় রয়েছি। দেশের উন্নয়নে কাজ করেছি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ভোট হবে সেবারও আমাকে ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন। আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন? আবার আসিবো ফিরে এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের তীরে।’
এর আগে বুধবার বিকেল ৩টা ৫২ মিনিটে তিনি সেখানে উপস্থিত হন। জনসভায় যোগদানের পাশাপাশি এখান থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার জেলার ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে দলীয় প্রধানের আগমন উপলক্ষে পর্যটন শহর কক্সবাজারে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়। আওয়ামী লীগের জনসভা এবং শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুনে বর্ণিল সাজে সেজেছে গোটা শহর। বরাবরের মতো নৌকা প্রতিকৃতির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে জনসভা মাঠে। লাল-সবুজ রঙিন নৌকায় সাজানো হয়েছে স্টেডিয়ামের পাশের জলাধার।
এবারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কক্সবাজার সিটি করপোরেশন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজকে হাসপাতালে রূপান্তর, মহেশখালী-কক্সবাজার সংযোগ সেতুসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হবে।
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল কক্সবাজারবাসী। তবে এখন সেই রোহিঙ্গারা বিষফোড়ায় পরিণত হওয়ায় ওই সমস্যার স্থায়ী সমাধানেরও দাবি জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ইনানীতে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর পাটুয়ারটেকস্থ বঙ্গোপসাগরে আন্তর্জাতিক নৌ শক্তি প্রদর্শন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
ইনানী সমুদ্রসৈকতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে নৌবাহিনী আয়োজিত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৮ দেশের নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সংস্থার অংশগ্রহণে চার দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ (আইএফআর)-২০২২- এর আয়োজন করে।
‘আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউতে’ বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৮টি দেশের ৪৩টি যুদ্ধ জাহাজ, দুটি বিএন এমপিএ এবং ৪টি বিএন হেলিকপ্টার অংশ নিয়েছে।
মন্তব্য করুনঃ