• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১ বিকাল ০৫:৪৩:৩৩ (28-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

নোয়াখালীতে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ এএসপি ও ওসি


শুক্রবার ১২ই মে ২০২৩ রাত ০১:১৯



নোয়াখালীতে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ এএসপি ও ওসি

অবরুদ্ধ অবস্থায় এএসপি এবং ওসি

চ্যানেল এস ডেস্ক:
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার টাংকির ঘাট পুলিশ ক্যাম্পে স্থানীয়দের হাতে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন লক্ষীপুরের রামগতি সার্কেলের এএসপি সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।

বিক্ষোভরত স্থানীয় লোকজন।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল ৫টায় দুই জেলার সীমানা বিরোধের জেরে টাংকির ঘাট এলাকায় পুলিশ ক্যাম্পে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

খবর পেয়ে রাত ১০টার পরে নোয়াখালী সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে আনে।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ এণ্ড অপস) বিজয়া সেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘রাতে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে টাংকির ঘাট গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। পরে লক্ষ্মীপুর জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী ও রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে আছে বলেও জানান তিনি।’

স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরের পুলিশ কর্মকর্তারা বিকেলে টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন। পরে তারা ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে গোল ঘরে বসেন। এর কিছুক্ষণ পরে গোল ঘরে আসেন হরনী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবুল হোসেন সুজন ও টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন।

কিছুক্ষন পর পুলিশ গোল ঘর থেকে তাদেরকে বের করে দিলে বিষয়টি বাজারে উপস্থিত লোকজনের নজরে আসে এবং উত্তেজিত হয়ে ক্যাম্প ঘেরাও করেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. বাবুল হোসেন সুজন অভিযোগ করে বলেন, ‘বিকেলে টাংকিরঘাট বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন রামগতি সার্কেল ও রামগতি থানার ওসি। তাদের দেখে আমি, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন মেম্বার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইন উদ্দিন মেম্বার ও সাখাওয়াত মাস্টার ক্যাম্পের গোল ঘরে যাই। আমাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে বের হয়ে যেতে বলেন সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী। একপর্যায়ে তিনি আমাদের দিকে তেড়ে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ওই কক্ষ থেকে বের করে দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওনারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রামগতি থেকে হাতিয়ায় এসেছেন। এর আগেও একাধিকবার রামগতির পুলিশ ও লোকজন বিভিন্ন সময় আমাদের সীমানায় এসে স্থানীয় লোকজনকে মারধর করেছেন। আমাদের লাঞ্ছিত করা ও তাদের হয়রানি থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পেতে লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বলে জানান মো: বাবুল হোসেন।’

টাংকিরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মেম্বার সহ আমি ক্যাম্পের গোল ঘরে গেলে সহকারী পুলিশ সুপার মেম্বারদের ওপর উত্তেজিত হয়ে সবাইকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আমরা দ্রুত ওইস্থান থেকে বের হয়ে চলে আসি।’

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমাদের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে টাংকিরঘাট ক্যাম্পে আসি। ক্যাম্পে আমাদের মিটিং (সভা) চলাকালে স্থানীয় মেম্বাররা আসলে আমরা ওনাদের পরে আসতে বলি। কিন্তু ওনারা বাইরে গিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উত্তেজিত করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছেন। এর পেছনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর ইন্ধন রয়েছে বলে জানান তিনি।’

রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী মেম্বারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘টাংকির বাজার ক্যাম্পের পাশে নোয়াখালী অঞ্চলে আরও একটি আরআরএফ (রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স) ক্যাম্প রয়েছে। আমরা ক্যাম্পের গোল ঘরে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সদের নিয়ে মিটিং এ বসার কিছুক্ষণ পর কোনো কিছু না বলে একজন লোক এসে বসে পড়েন। আমি ওনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মাইন উদ্দিন মেম্বার বলে পরিচয় দেন।’

তিনি বলেন, ‘মেম্বার ও ওনার সঙ্গে থাকা লোকদের পরে আসার জন্য বললে তারা বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজনকে উত্তেজিত করে তুলে সহস্ত্রাধিক লোক জড়ো করে ফেলেন। এ ঘটনায় রামগতি ও হাতিয়ার সীমানা বিরোধের যোগসূত্র থাকতে পারে। পরে নোয়াখালী থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন, ওনারা আসার পর বিষয়টি নিয়ে কথা হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এর আগেও রামগতির পুলিশ এসে আমাদের লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করেছে। আজও তারা আগের কায়দায় লোকজনকে হেনস্তা করায় স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন

মন্তব্য করুনঃ