সাতক্ষীরার শ্যামনগরে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলে কার্ড করিয়ে দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজনকে দিয়েছেন ভুয়া কার্ডও।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, ঠিকমতো স্কুলেও যান না এই প্রধান শিক্ষক। এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সুন্দরবন উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন লিটন জেলে কার্ড করিয়ে দেয়ার নামে ৭২ জন অভিভাবকের কাছ থেকে মাথাপিছু ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন। কার্ড না পেয়ে টাকা ফেরত পেতে দিনের পর দিন ঘুরছেন অনেকে। পরে কয়েকজনকে ভুয়া জেলে কার্ড ধরিয়ে দেন তিনি। এছাড়া কার্ড দিতে না পারায় বিবাদে জড়ানো দু’একজনের টাকা ফেরত দিয়ে সাদা কাগজে নিয়েছেন স্বাক্ষর।
জানা গেছে, স্কুলটিতে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী ৪৩৩ জন। তবে, উপস্থিতি একেবারেই কম। অভিভাবকদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে ঠিকমতো পাঠদান হয় না। মাসে দু’একবার স্কুলে হাজিরা দেন প্রধান শিক্ষক।
এছাড়া চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও আছে লিটনের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, আমরা স্কুল পরিদর্শন করেছি। অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন; তারাও বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। স্থানীয় জনগণও আমাকে অবহিত করেছেন এই স্কুলের প্রদান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে আসেন না এবং পাঠদানের কার্যক্রম ঠিকমতো পরিচালিত হয় না।
এ বিষয়ে গাবুরা খোলপেটুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন লিটন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাদের উদ্দেশ্য হলো যে- কোনো মূল্যে প্রধান শিক্ষককে এখান থেকে সরাতে হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত করার জন্য কলারোয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তদন্ত করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে খোলপেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন লিটন। ২০১২ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধান শিক্ষকের।
মন্তব্য করুনঃ