• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ বিকাল ০৪:৩১:৪২ (08-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

ধরাশায়ী যেসব হেভিওয়েট ও আলোচিত প্রার্থীরা


সোমবার ৮ই জানুয়ারী ২০২৪ দুপুর ০২:৫৪



ধরাশায়ী যেসব হেভিওয়েট ও আলোচিত প্রার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

চ্যানেল এস ডেস্ক: 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছেন অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের মধ্যে আছেন দুইজন প্রতিমন্ত্রী, সাবেক দুই মন্ত্রী, সংগীত শিল্পী, কয়েক মেয়াদের সংসদ সদস্য। 

জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, জাতীয় পার্টির(জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, তৈমুর আলম খন্দকার ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী মমতাজ বেগমসহ অনেকই রয়েছেন এই তালিকায়। 

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে বড় ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিনের কাছে পরাজিত হয়েছেন ১৪ দলের প্রভাবশালী নেতা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ আসনে টানা তিনবারের এমপি ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। অন্যদিকে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট।

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি) আসনে ভরাডুবি হয়েছে জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলুর (কেটলি) কাছে ধরাশায়ী হন। এ আসনে আসাদুজ্জামান বাবলু ৭৩ হাজার ৯২৭ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে মসিউর রহমান রাঙ্গা (ট্রাক) পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩২ ভোট। এছাড়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (লাঙ্গল) পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৯২ ভোট।
হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ঈগল প্রতীকের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী। নির্বাচনে সুমন এক লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।

ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে হেরেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।

এ আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। ৭৬ হাজার ২০২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থান অর্জন করেছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ। আর নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর পেয়েছেন মাত্র ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট পেয়েছেন।

পিরোজপুর-২ আসনে জয়ী হয়েছেন জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ। এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি আসনটির ৬ বারের এমপি। মহিউদ্দিন মহারাজ ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯৪ হাজার ৫৪৪ ভোট, আর নৌকা নিয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৯৬ ভোট। মহিউদ্দিন মহারাজ এক সময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর এপিএস ছিলেন।  

সিলেট-৬ আসনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে বিপুল  ভোটে হেরেছেন বিএনপির সাবেক নেতা ও তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। আনসটিতে নাহিদ পেয়েছেন ৫৮ হাজার ১২৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৩৮৭ ভোট। ১০ হাজার ৮৫৮ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকারের। তিনি ভোট পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০টি। এ আসনে চতুর্থবারের মতো জয় পেয়েছেন নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ভূঁইয়া কেটলী প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট।

টাঙ্গাইল ৮ আসনে পরাজিত হয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। গামছা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট। আসনটিতে নৌকার প্রার্থী অনুপম শাহজাদা জয় ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। 

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে দুইবারের এমপি জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লা নাহিদ নিগারের ঢেঁকি প্রতীকের কাছে হারতে হয়েছে তাকে। এ আসনে আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার পেয়েছেন ৬৬ হাজার ৪৯টি ভোট। আর লাঙল প্রতীকে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী পেয়েছেন ৪৩ হাজার ৪৯১টি ভোট।

ঢাকা ১৮ আসনে হেরেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদের। এ আসনে কেটলি প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের এসএম তোফাজ্জল হোসেন পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৯০৯ ভোট। আর লাঙল প্রতীক নিয়ে শেরীফা কাদের পেয়েছেন মাত্র ৬ হাজার ৪২৯ ভোট। 

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশার কাছে হেরেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা। এ আসনে শফিকুর রহমান বাদশা পেয়েছেন পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৯০৬ ভোট। আর নৌকা প্রতীকের ফজলে হোসেন বাদশা পেয়েছেন ৩১ হাজার ৪৬৬ ভোট।

এছাড়াও ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর কাছে আবারও হেরেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। ঈগল প্রতীকে নিক্সন পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ ভোট। আর নৌকা প্রতীকে কাজী জাফর উল্যাহ পেয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬ ভোট।

মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও সদরের একাংশ) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হেরে গেলেন তিনবারের এমপি নৌকা প্রতীকের মমতাজ বেগম। আসনটিতে টুলু পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৫২৫ ভোট। অন্যদিকে মমতাজ পেয়েছেন ৭৮ হাজার ২৬৯ ভোট।  

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব ঈগল প্রতীকে ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট। 
মাদারীপুর-৩ আসনে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ)। স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের ঈগল প্রতীকের কাছে হেরে যান তিনি। ঈগল পেয়েছে ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট। আর গোলাপ পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট।

মাহিয়া মাহি

প্রচারণায় চমক দেখালেও ভোটযুদ্ধে হেরে গেছেন নায়িকা মাহিয়া মাহি। রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই নায়িকা পেয়েছেন মাত্র ৯ হাজার ৯ ভোট। একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোট। একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানী পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯ ভোট! চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি শুরুতে আওয়ামী লীগের হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষিত মনোনয়ন তালিকায় নাম না থাকায় পরে রাজশাহী–১ আসনে মাহি স্বতন্ত্র থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

ডলি সায়ন্তিনী

একসময়ের জনপ্রিয় গায়িকা ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচন শেষে রাতে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় ডলি সায়ন্তনী পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ৩৮২ ভোট। এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ কবির। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হজার ৮৪২ ভোট। তারকাদের মধ্যে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন ডলি সায়ন্তনী। তবে ভোট প্রদান শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন এই গায়িকা।

নকুল কুমার বিশ্বাস

বরিশাল-২ আসন থেকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন শিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস। তবে নির্বাচনে অংশ নিলেও এ অঞ্চলের মানুষ নির্বাচিত করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেনন ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীপ্রার্থী এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু (ঈগল প্রতীক) পেয়েছেন ৩২ হাজার ১৯ ভোট।

বোনের কাছে ভাই হেরে গেছেন:

কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। তিনি পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৩৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এমপি লিপি’র বড় ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৬২ ভোট। তারা প্রয়াত জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান ।

হেরে গলেন মেজর(অব.):আখতার

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে ২০ হাজার ৬০৭ ভোটের ব্যবধানেবেসরকারিভাবে নির্বাচিতহয়েছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী আওয়ামীলীগের সাবেকএমপি এডভোকেটমো. সোহরাবউদ্দিন।  ঈগলপ্রতিক নিয়ে তিনিপেয়েছেন ৮৯ হাজার ৫৩৯ ভোট। তারনিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীআওয়ামী লীগপ্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুলকাহার আকন্দপেয়েছেন ৬৮ হাজার ৯৩২ ভোট। অন্যদিকেএ আসনেরঅপর স্বতন্ত্রপ্রার্থী আখতারুজ্জামানরঞ্জন পেয়েছেন ১৬ হাজার ১৯৯ ভোট।এ আসনের দুই উপজেলায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮২টি ভোট গৃহিত হয়েছে। এ হিসেবে আখতারুজ্জামান রঞ্জন তার জামানত হারিয়েছেন।

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ