চ্যানেল এস ডেস্কঃ
বাংলাদেশের কুমিল্লা, নেত্রকোনা ও পার্বত্য অঞ্চল সহ কিছু এলাকায় কাসাভা নামক একটি ফসলের চাষ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন খাদ্য হিসেবে খুব বড় বাজার তৈরির সম্ভাবনা কম থাকলেও শিল্পখাতে এর ব্যাপক ব্যবহারের সম্ভাবনায় ক্রমশ এর আবাদ বাড়ছে।
তবে আবাদ বাড়লেও চাষ পদ্ধতি, জমির প্রকার এবং বাজার- এসব বিবেচনায় বাংলাদেশে কাসাভার ব্যাপক বানিজ্যিক চাষের সুযোগ কম বলেই বলছেন তারা।
সরাসরি খাদ্য হিসেবে কাসাভার ব্যবহার বাংলাদেশে সীমিত হলেও গ্লুকোজ, বার্লি, সুজি কিংবা চিপসের মতো খাবার তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। তবে এর সবচেয়ে বড় ব্যবহারের জায়গা হলো শিল্প খাত।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ মোঃ সোলায়মান আলী ফকির বলছেন খাদ্যের চেয়ে শিল্পে এর ব্যবহার হয় বেশি। বিশেষ করে বস্ত্র ও ঔষধ শিল্পের জন্য কাসাভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
“গ্লুকোজের অন্যতম মূল উপাদান কাসাভা। এছাড়া বস্ত্র শিল্পে কাপড়ের মাড় তৈরিতে এটা দরকার। এজন্য বাংলাদেশকে এসব উপাদান এখন বহুলাংশেই আমদানি করতে হয়। সে কারণেই খাদ্যের চাইতে শিল্পের জন্য বাংলাদেশে কাসাভার ভবিষ্যত ভালো”
বাংলাদেশর কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মোঃ মনিরুল ইসলাম বলছেন তারা ইতোমধ্যেই দুটি জাতের কাসাভার অনুমোদন দিয়েছেন।
“বাংলাদেশে এখন কাসাভা স্টার্চের (মাড় যা বস্ত্র ও ঔষধ শিল্পে ব্যবহার হয়) বার্ষিক চাহিদা প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টন। কিন্তু দেশে উৎপাদিত হয় ৫/৬ হাজার টন উৎপাদিত। আবার প্রতি বছর চাহিদা বাড়ছে দশ/পনের শতাংশ হারে”
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জোনায়েদ কবির খান বলছেন লালমাই পাহাড় এলাকায় অনেক চাষিই বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সহায়তা নিয়ে কাসাভা চাষ করছেন। কিছু কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করেছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন পাহাড়ি, টিলা কিংবা শুষ্ক এলাকাগুলোর যেখানে অন্য ফসল চাষ করা কঠিন সেখানেই কাসাভা ভালো চাষাবাদ হতে পারে। আবার বাড়িতে পরিত্যক্ত বা অনাবাদী জমিতেও চাষ করা যায়। তার মতে কাসাভা গাছ গরু ছাগল বা গবাদি পশু না খাবার কারণে এটি জমি আইলেও চাষ করা সম্ভব।
দেশের এমন জায়গাগুলো চিহ্নিত করে কাসাভা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলে এর ওপর আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।
মন্তব্য করুনঃ