• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ সন্ধ্যা ০৬:২৪:০৮ (29-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে যা বলছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়


বৃহঃস্পতিবার ২৫শে মে ২০২৩ দুপুর ১২:২৬



যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে যা বলছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি সংগৃহীত

চ্যানেল এস ডেস্ক: 

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে বলে মনে করে সরকার। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়েছে। 

এতে বলা হয়, নিজেদের ভোট ও গণতান্ত্রিক অধিকারের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণ অনেক বেশি সচেতন। ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকার কোনো নজির এ সরকারের নেই। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকারকে রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা হিসেবে গণ্য করে। এমনকি জনগণের ভোটাধিকারের জন্য আওয়ামী লীগের নিরলস সংগ্রাম ও ত্যাগের ইতিহাস রয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য জমায়েত ও সভা-সমিতির স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয় সরকার। 

এতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশের নির্বাচন সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার এক কোটি ২৩ হাজার ভুয়া ভোটার করেছিল। পরবর্তীতে যাতে কেউ ভুয়া ভোটার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা হয়েছে। ভোটারসহ নির্বাচনী কর্মকর্তা ও এজেন্টদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে স্বচ্ছ ব্যালট বক্স ব্যবহারের নিয়ম করা হয়েছে। 

এছাড়া পূর্ণ স্বাধীনতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় অর্থ ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সরকারই প্রথম ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। এ আইন অনুসারে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ম্যান্ডেট অনুসারে নির্বাচনকালীন পুরো নির্বাহী প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীন থাকবে, যাতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে তারা দায়িত্ব পালন করে যেতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা প্রতিষ্ঠানের অবৈধ হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সরকারও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাপক নজরদারিতে রাখা হবে, যাতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও অংশগ্রহণ করবেন। সরকারের প্রত্যাশা, সহিংসতা, অগ্নিসন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত স্থানীয় অগণতান্ত্রিক শক্তির ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে সংবিধানের ম্যান্ডেট অনুসারে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে বিভ্রান্তিকর চেষ্টা থেকে তারা বিরত থাকে। 

বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়, বহু কষ্টে অর্জিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখার দায়িত্ব পুরোটাই জনগণের। সরকার মনে করে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জোরালোভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকবে। 

এতে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীল দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এ সময়ে কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে নজিরবিহীন সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। এতে ২০০৬ সালে যেখানে ৪১.৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল, ২০২২ সালে সেটা কমে ১৮.৭ শতাংশ হয়েছে। 

আরও বলা হয়, বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয় বাংলাদেশকে, ২০২৬ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকেও বেরিয়ে আসার যোগ্যতা অর্জন করেছে। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার পরপর তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আসার কারণেই এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে। 

এর আগে, বুধবার (২৩ মে) রাতে এক টুইটবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের বিষয়ে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেন। 

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারায় একটি নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করছি। এ নীতির অধীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য যারা দায়ী বা জড়িত থাকবে, সেসব বাংলাদেশির ভিসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

‘এর আওতায় বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। 

‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এমন কার্যক্রম হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিহ্নিত করেছে: ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।’ 

ব্লিঙ্কেন আরও উল্লেখ করেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সবার—ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের। বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।’

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ