চ্যানেল এস ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকায় বিড়াল ছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণের আট দিন পর শিশু আবিদা সুলতানা আইনীনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পিবিআই। ধর্ষণের পর বালিশচাপা দিয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই পুলিশ সুপার। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতির কারণে আবিদাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় সবজি বিক্রেতা রুবেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নগরীর আলম তারা পুকুরপাড়ের এ এলাকা থেকেই বস্তাবন্দি অবস্থায় আবিদা সুলতানা আইনীনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নগরীর আলম তারা পুকুরপাড় এলাকা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরে আসামি রুবেলকে নিয়ে অভিযান শুরু করে পিবিআই। অভিযানের একপর্যায়ে সাগরিকা এলাকার আলম তারা পুকুরপাড়ের ময়লা-আর্বজনার স্তূপ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে পিবিআই।
এর আগে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত ২০ মার্চ আবিদা সুলতানার সঙ্গে কথা বলছেন স্থানীয় সবজি বিক্রেতা রুবেল। এর একদিন পর ২১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টায় ঘর থেকে বের হতে দেখা যায় শিশুটিকে। কিন্তু এরপর আট দিন পেরিয়ে গেলেও আবিদার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
নিখোঁজের পর থেকে পরিবারের সদস্যরা দাবি করে আসছিলেন, সবজি বিক্রেতা রুবেল বিড়াল ছানা দেয়ার লোভ দেখিয়ে আবিদাকে অপহরণ করেছে। এ অভিযোগের পর থেকেই ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। সবজি বিক্রেতা রুবেল এলাকা ছেড়ে যায়নি। উদ্ধারকাজেও সহায়তা করছিল সে। পুরোটা সময় সে ছিল স্বাভাবিক। তবে তাকে নজরদারিতে রাখে পিবিআই। তদন্তের একপর্যায়ে বুধবার ভোরে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে রুবেল।
চট্টগ্রাম মহানগর পিবিআইর ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) কাজী এনায়েত কবির বলেন, ‘আসামি রুবেল আমাদের মিসগাইড করেছে। তবে সে আমাদের নজরদারিতেই ছিল। বুধবার ভোরে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে নেয়।’
ধর্ষণ করে রুবেল ওই শিশুটিকে বালিশচাপা দিয়ে গত ২১ মার্চ হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সুপার।
পিবিআইর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ‘সে (রুবেল) প্রথমে শিশুটিকে ধর্ষণ করে এবং পরে বালিশচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে। সে যেহেতু সবজি বিক্রেতা, সে সবজির ঝুঁড়িতে করে মরদেহটি ময়লা-আর্বজনার স্তূপে এনে ফেলেছে।’
ঘটনার পর থেকে আসামি জায়গা বদল করেনি। তারপরও গ্রেফতারে এত সময় কেন লেগেছে - এ প্রশ্নে নাইমা সুলতানা বলেন, ‘সে শুধু যে অবস্থান পরিবর্তন করেনি তা নয়, বরং আমাদের কাজেও সহযোগিতা করছিল। মোট কথা তাকে সন্দেহ হতে পারে এমন কোনো কিছুই তার একটিভিটির মাঝে ছিল না। ফলে সে বারবারই সন্দেহের তীর তার দিক থেকে সরিয়ে নিয়েছিল। প্রতি মুহূর্তে সে মিসগাইড করে যাচ্ছিল। তবে সে আমাদের নজরদারিতে ছিল।’
এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর শোনার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। পুলিশের গাফিলতির কারণে আবিদা সুলতানাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
মন্তব্য করুনঃ