চ্যানেল এস ডেস্ক:
ভোলায় অসহায় দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে ১২ জন দরিদ্র রিকশা চালকের মাঝে বিনামূল্যে রিকশা বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার ভোলা ইলিশা সড়কের পাশে ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কার্যলয়ের সামনে দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে দাতব্য প্রতিষ্ঠান কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন এই রিক্সা বিতরণ করে। এর আগেও দুই ধাপে ২৪টি রিকশা বিতরণ করে ফাউন্ডেশনটি। এই নিয়ে ৩৬ জন দরিদ্র পরিবারের মাঝে রিকশা বিতরণ করা হলো। সকালে রিকশা বিতরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মামুন-অর রশিদ, ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল,জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম, ভোলা প্রেসক্লাবের সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাঞ্চন- ফাতেমা ফাউন্ডেশনের সদস্য সুলতান মাহমুদ মঞ্জিল,সাধারণ সম্পাদক হাসান ইশতিয়াক বাবু । অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সদস্য আলতাজুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ জাহানজেব আলম টিটব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য আশরাফুল হক সোহেল।
স্থানীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠান কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন উদ্যোগে অসহায় ১২টি পরিবারের মধ্যে ব্যাটারি চালিত রিকশার চাবি হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান। ফাউন্ডেশন এই উপকরণ পেয়ে খুশি উপকারভোগী পরিবার গুলো।
কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন ২০১৮ সাল থেকে ভোলা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দরিদ্র অসহায় মানুষকে স্বাবলম্বী করার জন্য রিকশা, ভ্যানগাড়ি, সেলাই মেশিন, গরু, ঈদ উপহার, চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছে। রিকশা পাওয়া মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, নদী ভাঙ্গনে আমার সবশেষ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে কোনোরকম বেড়িঁবাধের পাড়ে আশ্রয় নিয়েছি। সংসার চালানোর জন্য রিকশা চালিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতাম। তিন বেলা ঠিকমতো খেতেও পারতাম না। এখন কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন থেকে আমাকে ব্যাটারি চালিত রিকশা দিয়েছে। এই রিকশা চালিয়ে আমি এখন আয় করবো তা দিয়ে সংসার চালাবো। আশা করি আগের চেয়ে বেশি যাত্রি পাব। ভোলার ধনিয়া এলাকার নবীপুরের রিকশার ড্রাইভার সোপান বলেন, আগে ভাড়া গাড়ি চালিয়েছি দু' থেকে তিনশ টাকা আয় করেছি। তাতে কষ্ট হয়ে যেতো সংসার চালাতে। এখন ব্যাটারি চালিত রিকশার মাধ্যমে যে আয় হবে তা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারবো। ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন,কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগটি একটি মহৎ উদ্যোগ।সরকারের পাশাপাশি এ ধরনের সামাজিক কার্যক্রম সাধারণ মানুষকে নিরাপদ বেষ্টনীর মধ্যে নিয়ে আসে। আশা করি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেয়া যাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ভোলার সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, কাঞ্চন ফাতেমা ফাউন্ডেশন যে কাজটি করছে সেটি প্রকৃত সমাজসেবার কাজই করছে। তাদের কাজের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি নিয়ে বসবাস করতে পারবে। ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইশতিয়াক বাবু বলেন, সমাজের অসহায় মানুষদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতা আজ ১২ জন অসচ্ছল মানুষের মাঝে রিকশা বিতরণ করা হয়। আশা করি এই রিকশা যারা পেয়েছেন তারা রিকশা চালিয়ে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুনঃ