বাবা-মা, ভাই-বোন নিয়ে পরিবার মো. মনিরুজ্জামানের। ছোট এই সংসারে বাবা সিরাজুল ইসলাম একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। বাবা কৃষি কজের পাশাপাশি ব্যবসা করার চেষ্টা করলেও একার উপার্জনে সবার খরচ চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু মেধাবী মনিরুজ্জামান ছোট থেকেই ভালো পড়াশোনা করে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে থাকেন। ধীরে ধীরে তাঁর পড়াশোনা করে জীবনে কিছু করার ইচ্ছেটাও বাড়তে থাকে তাঁর।স্বপ্ন যখন বড় হতে থাকে, স্বপ্ন পূরণের রাস্তাটাও ধীরে ধীরে কঠিন হতে থাকে। ঠিক তাই হলো মনিরুজ্জামানের সঙ্গেও।
কিন্তু মনিরুজ্জামান থেকে যাননি। রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকোরচালি উচ্চবিদ্যালয় ২০১৪ সালে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন তিনি। ভালো ফলাফল করায় পড়াশোনা এগিয়ে নেয়ার ইচ্ছেটাও দ্বিগুণ হয়ে যায় তাঁর। আর তাই এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি পরীক্ষা দেন এবং আর্কিটেকচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে যান। কিন্তু ওই সময় পড়াশোনার খরচ চালানো বাবার একার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিল না। তাঁর এই সফলতা প্রথম আলোতে তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করে তাঁকে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হয়।
শিক্ষাবৃত্তি পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা শেষ করার পথকে সহজ করেছে। সব কিছুর জন্য অনেক কৃতজ্ঞ আমি।
দ্রুত কর্মজীবনে প্রবেশ করে পরিবারের হাল ধরার জন্য কারিগরি শিক্ষায় সহায়তা প্রদান করে প্রথম আলো ট্রাস্ট। এতে সহযোগী হয় সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এসডিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। মনিরুজ্জামান এই প্রকল্প থেকে শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আর্কিটেকচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিভাগে জিপিএ-৩.৪৮ পেয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।
বর্তমানে তিনি পদ্মাসেতু রেলসংযোগ প্রকল্প, যশোরে কর্মরত। বাবার সঙ্গে সঙ্গে তিনিও উপার্জন করে পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এই শিক্ষাবৃত্তি পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা শেষ করার পথকে সহজ করেছে। সব কিছুর জন্য অনেক কৃতজ্ঞ আমি।’
মন্তব্য করুনঃ