চ্যানেল এস ডেস্ক:
গাজীপুরে বনখড়িয়া এলাকায় রেললাইন কেটে নাশকতা সৃষ্টির পুরো চক্র শনাক্ত করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। রেললাইন কাটার সময় উপস্থিত সাত জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। রেললাইন কাটার জন্য ঢাকা থেকে যে দুই জনকে নেওয়া হয়েছিল, তাদেরকেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এ চক্রটি গাজীপুরে বনখড়িয়া এলাকায় রেললাইন কেটে নাশকতা সৃষ্টির জন্য ঢাকা থেকে দুই জন কাটার ম্যানকে ঘটনার দুই দিন আগে ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদেরকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার একটি বাড়িতে রাখা হয়। ঐ বাড়িতে বসে নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়। ঐ বাড়িতে সে সময় বেশ কিছুসংখ্যক লোক উপস্থিত ছিল, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রেললাইন কাটা হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ঐ বাড়িও শনাক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে গাজীপুরের ভাওয়াল ও রাজেন্দ্রপুর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী বনখড়িয়া এলাকায় রেললাইন কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ কারণে ঐ দিন ভোর ৪টার দিকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ট্রেনযাত্রী আসলাম মিয়া নিহত ও লোকো মাস্টারসহ বেশ কয়েক জন গুরুতর আহত হন। এই ঘটনা তদন্তে রেলওয়ে, গাজীপুর জেলা প্রশাসন এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলাদা তিনটি কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনায় জড়িতদের ধরতে একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় গঠিত কমিটির সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার বনখড়িয়া এলাকার আশপাশের দুই গ্রামে অভিযান চালায়। র্যাব-১ এর গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন জানান, ট্রেনের বগি ও ইঞ্জিন লাইনচ্যুতি এবং হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে পুলিশ, ২ প্লাটুন র্যাব, ৩ প্লাটুন বিজিবি ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের (শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার-ভূমি মো. আল মামুন) সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করছে।
বিজিবির গাজীপুর-৬৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জড়িতদের খুঁজতে এবং নাশকতার কাজে ব্যবহূত গ্যাস সিলিন্ডারের উত্স অনুসন্ধানে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত ভাওয়াল গাজীপুর এবং গান্ধিবাড়ী দুই গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানকালে ঐ এলাকায় অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ পাওয়া গেছে। বাড়িতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, নারী-শিশুরা রয়েছে। তবে অনেকটাই পুরুষশূন্য ছিল।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের ওয়াচম্যানদের কাছ থেকে কিছু তথ্য নেওয়া হয়েছে। এলাকায় কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান পাওয়া গেছে। অভিযানকালে দুটি অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকানও পাওয়া গেছে। এসব দোকান অধিকতর তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।
মন্তব্য করুনঃ