আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
দক্ষিণ আফ্রিকা রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়েছে এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। তিনি বলেছেন, স্বাধীন তদন্তে এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, দক্ষিণ আফ্রিকা রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
এছাড়া কেপটাউনে গোলাবারুদ ও অস্ত্র বোঝাই রুশ জাহাজের বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দাবিও প্রত্যাখ্যান করেছে তদন্তকারী প্যানেল। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এর আগে গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে গোলাবারুদ ও অস্ত্র বোঝাই রাশিয়ান জাহাজ ছিল বলে দাবি করেছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার তদন্তকারী প্যানেল সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
অবশ্য এই ধরনের অভিযোগ ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে আফ্রিকার এই দেশটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, এই অভিযোগ দেশের মুদ্রা ও সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
রোববার জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, ‘জাহাজে করে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অস্ত্র পরিবহন করা হয়েছে বলে কোনও প্রমাণই পায়নি তদন্তকারী প্যানেল। এছাড়া অস্ত্র রপ্তানির জন্য কোনও পারমিট জারি করা হয়নি এবং কোনও অস্ত্রই রপ্তানি করা হয়নি।’
তদন্তে দেখা গেছে, রাশিয়ান একটি কার্গো জাহাজ রাশিয়া থেকে অস্ত্রের একটি চালান দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে দিয়েছে। ২০১৮ সালে এই অস্ত্র অর্ডার করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, গত ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি সাইমন টাউনে একটি জাহাজ ছিল। আর ট্রাকে করে অস্ত্র সেই জাহাজে লোড করা হয় বলেও দাবি করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রুবেন ব্রিগেটি।
তিনি গত মে মাসে প্রিটোরিয়ায় এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, তিনি ‘আত্মবিশ্বাসী’ যে জাহাজটিতে অস্ত্র এবং গোলাবারুদই লোড করা হয়েছিল। কারণ জাহাজটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রাশিয়ায় ফিরে যায়।
ব্রিগেটির সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট রামাফোসা এই ঘটনায় একজন বিচারকের নেতৃত্বে স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দেন। রোববার তিনি বলেন, ‘যারা এই অভিযোগগুলো করেছে, তাদের কেউই আমাদের দেশের বিরুদ্ধে করা দাবিগুলোর সমর্থনে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে টানা সাড়ে পাঁচশো দিনেরও বেশি সময় ধরে এই যুদ্ধ চলছে এবং ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এমনকি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে প্রকাশ্যে নিন্দা জানাতেও অস্বীকার করেছে দেশটি। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার এই অবস্থানের সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো।
মন্তব্য করুনঃ