বাঙালি মাথা খাওয়ায় ওস্তাদ। একই মাথা নানান কায়দায় মজা করে খাওয়ার অনেক পন্থা আমরা রপ্ত করে রেখেছি। বলছিলাম মাছের মাথা রান্না করে খাওয়ার কথা। রেস্তোরাঁয় ভালো করে পরিষ্কার করা হয় কি না, সে শঙ্কায় খাওয়া হয় না। ফোন দিলাম হবিগঞ্জ, আমার আম্মা আয়েশা খাতুনকে। তিনি বললেন, ‘ইলিশ মাছের মাথা হলে নানাভাবে খেতে পারবি। মুড়িঘন্ট, কচু শাক, লাউসহ অন্যান্য সবজি দিয়েও খাওয়া যায়। কিছুদিন আগে রাহী মিষ্টিকুমড়া দিয়ে ইলিশের মাথা রান্না করেছিল। দারুণ স্বাদ হয়েছে।’
ভাগনি তাহমিনা রাহী ফোন ধরে বলে, ‘আমি তোমাকে পাঁচ মিনিটে রেসিপি বলব, মসলাপাতি কম লাগে, আধা ঘণ্টায় রান্না শেষ করে ফেলতে পারবা। ছোট ছোট টুকরা করে কাটা মাঝারি আকারের একটি পাকা মিষ্টিকুমড়া। দুটি ইলিশ মাছের মাথা, সঙ্গে লেজ ও ছোট টুকরা দিয়ে দিতে পারো। আধা কাপ সয়াবিন তেল। পেঁয়াজকুচি। দুই চা-চামচ মরিচগুঁড়া। এক চা-চামচ জিরা, ধনে ও হলুদগুঁড়া। এক টেবিল চামচ পেঁয়াজ ও রসুনবাটা। ফালি করে কাটা কাঁচা মরিচ। লবণ। মাছের মাথা এবং অন্যান্য টুকরা লবণ–পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নাও।
এবার কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজকুঁচিগুলো ভাজো। এখন লবণ ও আধা কাপ পানি দিয়ে সব মসলা কষাতে থাকো। তেল ওপরে ভেসে উঠলে টুকরা করা মাছের মাথা দিয়ে ঢেকে রাখো দু–এক মিনিট। মাছের মাথার ভেতর যাতে মসলা ভালোভাবে ঢুকতে পারে, এ জন্য একটু আগে দিয়েছি। এবার ঢাকনা খুলে দু–চার মিনিট কষিয়ে বাকি মাছগুলো দাও। সব মাছ আরও দুই মিনিট ঢাকনা দিয়ে কষিয়ে মিষ্টিকুমড়ার টুকরোগুলো দিয়ে দাও।’
‘এবার কত সময় ধরে কষাতে হবে?’
‘যদি মিষ্টিকুমড়া গলিয়ে ফেলতে চাও, তাহলে ১৫ মিনিট। আর যদি একটু শক্ত শক্ত রাখতে চাও তাহলে ৮ মিনিট নাড়াচাড়া করো। শক্ত রাখলে একরকম মজা, নরম করলে আরেক রকম মজা। তোমার ইচ্ছা। মিষ্টিকুমড়া সেদ্ধ হয়ে এলে কাঁচা মরিচ ও আধা লিটার পানি দিয়ে আরও ১০ মিনিট জ্বাল দাও। রান্না শেষ। আগুন বন্ধ করে ধনেপাতা দিয়ে ঢেকে রাখো। তরকারি একটু ঠান্ডা হলে মোটা চালের ধোঁয়া ওঠা গরম সাদা ভাত দিয়ে খেলে ভালো লাগবে।’
মন্তব্য করুনঃ