চ্যানেল এস ডেস্ক:
বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শনিবার (৯ মার্চ) সারাদেশে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
বুধবার (৬ মার্চ) বিকালে নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, গুপ্তহত্যা, অপহরণ, গুম, ক্রসফায়ার নিত্যদিনের ঘটনার পাশাপাশি ডামি সরকার মানুষের জরুরিসেবা বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, সুপেয় পানির সঙ্কটকে ঘনীভূত করেছে। এগুলো আজ সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঋণক্লিষ্ট অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগে চরম নৈরাজ্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণে চরম নির্যাতন, লুটপাট করা অর্থবিত্ত, আইন-শৃঙ্খলার নামে মানুষের স্বাধীনতা হরণ- অত্যাচার, চক্রান্ত, খুন, সন্ত্রাস, বিশ্বাসঘাতকতা, কুৎসাসহ এদের কলঙ্কের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, তা কোনোভাবেই ছাইচাপা আগুনের মতো আর লুকোতে পারছে না।
বিদ্যুৎখাতকে লোপাট করে আইনের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ‘ইনডেমনিটি আইন’ তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, গত ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৩০ শতাংশ। দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ বার। পিডিবির তথ্যমতে, গত ১৪ বছরে ১৩ দফায় খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে প্রায় ১৩০ শতাংশ। সরকার কমিশন ও লুটপাট করার জন্য তুলনামূলক কম টাকায় নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে কয়লা, তেল, গ্যাস ইত্যাদি পরিবেশ দূষণকারী ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করে দেশের পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনছে। কয়লা, গ্যাস, তেল ইত্যাদি আমদানির নামে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করছে। গ্যাস সঙ্কটে দেশের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িতে বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে রমজান মাসে ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে সাধারণ মানুষ।
তিনি আরও বলেন, রোজার প্রাক্কালে সরকারের সিন্ডিকেটের সদস্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিতভাবে নানা অঘটন ঘটিয়ে এরই মধ্যে বাড়িয়ে দিয়েছে চিনির দাম। শুল্ক কমানোর পরদিন থেকেই দাম তো কমেইনি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। খেজুরের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিক গতিতে, এত দাম বৃদ্ধি হয়েছে যে মানুষ আর খেজুর কিনতে পারছে না। প্রতি কেজিতে খেজুরের দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
'খেজুরের বদলে বরই দিয়ে ইফতার করুন, আঙ্গুর-খেজুর লাগবে কেন?'- শিল্পমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রতি এক ধরণের রসিকতা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, খেজুর দিয়ে ইফতারির যেমন সায়েন্টিফিক ব্যাখা আছে, তেমনি একইভাবে মহৎ অনুভুতিও রয়েছে। কারণ আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) খেজুর দিয়ে ইফতারি করতেন।
সবজির ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজসহ সব জিনিসের দাম এখন আকাশচুম্বী জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের চড়া মূল্য নজীরবিহীন ঘটনা। এই সময় পেঁয়াজের মূল্য থাকার কথা ১৫/২০ টাকা, কিন্তু এখনো ১০০ টাকার নিচে কোনো পেঁয়াজ পাওয়া যায় না। রোজার আগে ডিম, মাছ-গোস্তসহ সকল নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ হলো সরকারদলীয় সিন্ডিকেটের লুটপাট। ডামি সরকারের মন্ত্রীরা গরিব সাধারণ মানুষের সাথে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আচরণ করছেন।
মন্তব্য করুনঃ