• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৭ই পৌষ ১৪৩১ রাত ১০:১৫:২৫ (21-Dec-2024)
  • - ৩৩° সে:

‘অবিশ্বাস্য’ ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরিতে আফগানকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া


বুধবার ৮ই নভেম্বর ২০২৩ সকাল ১১:০৭



‘অবিশ্বাস্য’ ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরিতে আফগানকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক: 

বিশ্বকাপে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে আফগানিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো অস্ট্রেলিয়া। ২৯২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯১ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় চলে যাওয়া অজিদের একাই টানতে থাকেন ম্যাক্সওয়েল। ১২৮ বলে ২০১ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংসে হারের শঙ্কা কাটিয়ে আস্ট্রেলিয়াকে অবিশ্বাস্য এক জয় উপহার দেন ‘ম্যাক্সি’।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের দেয়া ২৯২ রানের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ট্রাভিস হেডের উইকেট হারায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার করতে আসা নাভিনের গুড লেন্থের বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক ইকরাম আলীখিলের হাতে ধরা পড়েন এই অজি ওপেনার। শূন্য রানেই সাজঘরে ফেরেন হেড।

তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা মিচেল মার্শ ক্রিজে এসেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন। আম্ররশের পাশাপাশি ডেভিড ওয়ার্নারও বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন। তবে আজি শিবিরে আবারও আঘাত হানেন নাভিন। এই আফগান পেসারের ইন সুইং বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন মার্শ। ২টি ছক্কা ২টি চারের সাহায্যে ১১ বলে ২৪ রানে ফেরেন এই অজি অলরাউন্ডার।

এরপর বল হাতে অজি ইনিংসে ধস নামান আজমতউল্লাহ। ইনিংসের নবম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন এই ডানহাতি পেসার। ফেরান ওয়ার্নার ও জস ইংলিসকে। পাওয়ারপ্লে শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ৫২ রান। এরপর মার্নাস লাবুশেনও ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গী হিসেবে টিকতে পারেননি, রানআউট হয়ে ফিরেছেন। টিকতে পারেননি মার্কাস স্টইনিস ও মিচেল স্টার্কও। ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে ইতিহাস গড়েছেন গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল। অষ্টম উইকেট জুটিতে প্যাট কামিন্সকে নিয়ে ম্যাক্সওয়েল ২০২ রানের জুটি গড়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ১২ রান এসেছে কামিস্নের ব্যাট থেকে। বাকি সব রানই ম্যাক্সওয়েলের।

রাশিদ খানের একটি ডেলিভারিতে ছয় হাঁকিয়ে, বেশ সমস্যায় পড়তে হয় ম্যাক্সওয়েলকে। পায়ে ব্যথা আর ক্রাম্প নিয়ে, অনিশ্চিত মনে হয়, অ্যাডাম জাম্পাও একবার বাউন্ডারি লাইনে এলেন, রিটায়ার্ড হার্ট হতে হয় কি না, কিন্তু না ম্যাক্সওয়েল আবার দাঁড়ালেন।পায়ের ব্যবহার না করেই একের পর এক বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। প্রয়োজনে নিয়েছেন দুই একটি সিঙ্গেল।

একটা সময়ে গিয়ে অজিদের প্রয়োজন হয় ২৪ বলে ২১ রান। বল করতে আসেন মুজিব উর রহমান। সেই ওভার ডট দিয়ে শুরু করেন ম্যাক্সওয়েল। এরপর ৬, ৬, ৪– জিততে দরকার আর মাত্র পাঁচ রান। এদিকে ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরি পেরোতে দরকার পাঁচ রান। পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় ও নিজের দ্বি-শতক দু’টিই পূরণ করেন এই অজি হার্ড-হিটার।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে দ্বিশতক করে তিনি অপরাজিত থাকেন ১২৮ বলে ২০১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে। যেখানে ১০টি ছক্কার পাশে চার ২১টি। অন্যদিকে কামিন্স ৬৮ বলে ১২ রান করে একপাশে স্থির হয়ে থাকলেন। ওয়ানডে ইতিহাসে রান তাড়ায় কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম দ্বিশতক এটি।

এর আগে, টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখেশুনেই করেছিলেন দুই ওপেনার ইব্রাহীম ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তবে জশ হ্যাজলউডের বল ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিচেল স্টার্কের হাতে ধরা পড়েন গুরবাজ। ফলে ২১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন এই আফগান ব্যাটার।

এরপর উইকেটে আসা নতুন ব্যাটার রহমত শাহকে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন ইব্রাহীম। তৃতীয় উইকেটে এই দু’জনে মিলে গড়েন ৮৩ রানের জুটি। তবে রহমতকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল। রহমত লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে জস হ্যাজেলউডের হাতে ধরা পড়েন ৪৪ বলে ৩০ রান করে।

চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক শাহিদিকে নিয়ে আবারও ৫২ রানের জুটি গড়েন ইব্রাহীম। অবশ্য মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে শেষ হয় শহীদির ২৬ রানের ইনিংস। উইকেটে এসে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা আজমতউল্লাহ ওমরজাই আউট হন জাম্পার বলে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ২২ রান।

এরপর মোহাম্মদ নবি ১২ রান করে ফিরলেও রশিদ খানকে সঙ্গী করে দারুণ এক জুটি গড়ে ফেলেন ইব্রাহীম। ৫৮ রানের অবিচ্ছিন এই জুটি এসেছে মাত্র ২৮ বলে। ইব্রাহীমকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে ১৮ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন রশিদ। অন্যদিকে, ৩টি ছক্কা ও ৮টি চারের সাহায্যে ১২৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ইব্রাহীম। ফলে নির্ধারীত ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ২৯১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় আফগানিস্তান।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট শিকার করেন জশ হ্যাজেলউড। এছাড়াও একটি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক, অ্যাডাম জাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ





















-->