ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের সরকারি সফরে দিল্লি পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফর দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিল্লিতে স্বাগত জানিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি তার অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে এ কথা বলেন।
অরিন্দম বাগচি টুইটার পোস্টে লেখেন, "এই সফর দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।"
এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে তিনি দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
বিমানবন্দরে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
এই সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদনদীর পানি বন্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতার বিষয়ক আলোচনা গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করবেন। করোনাভাইরাস মহামারি প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে সবশেষ ভারত সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় তিন বছর পর ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর তার আসন্ন ভারত সফরের সময় বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে ৬ সেপ্টেম্বর হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং একান্ত বৈঠক করার কথা রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পরে একটি প্রেস বিবৃতি জারি করা হবে।
ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউজে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন। শেখ হাসিনা পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।
৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে তার। এদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং দেশটির শীর্ষ শিল্পগ্রুপ আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখারের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার দেখা করার কথা রয়েছে।
আর ৭ সেপ্টেম্বর তার সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী।
৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের “মুজিব বৃত্তি” প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ ও আজমির (আজমির শরীফ দরগাহ) পরিদর্শন করবেন।
মন্তব্য করুনঃ