চ্যানেল এস ডেস্ক:
সহস্রাধিক মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসের শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে নোঙর প্রতীক নিয়ে দীর্ঘদিন পর নির্বাচনী এলাকায় এলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর।
শনিবার (০২ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর-১ আসনের (মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা) তিনটি উপজেলায় শোভাযাত্রা করেন শাহ মো. আবু জাফর। প্রথমে আলফাডাঙ্গা উপজেলা থেকে শুরু করে বোয়ালমারী হয়ে মধুখালীতে আসেন তিনি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে বিএনএম দলের নোঙর প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন শাহ মো. আবু জাফর। দীর্ঘদিন পর নতুন দল গঠন করে প্রথমবারের মতো এলাকায় আসেন তিনি। নির্বাচনী এলাকার মানুষ তাকে স্বাগত জানান।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করেছি, বিএনপিতে আমি আমার মর্যাদা পাইনি। মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়ি। তখন আমার রাজনৈতিক সহকর্মীরা আমার পাশে দাঁড়ায় এবং নতুন দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেই। পুনরায় তাদের পাশে পেয়ে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যায়-অবিচার, শোষণ নিপীড়ন প্রতিরোধে আন্দোলন করতেই বিএনএমের সৃষ্টি। সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চাই। মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’
শাহ জাফর বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এককভাবেই আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাচ্ছি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো দাওয়াত এখনও আমরা পাইনি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে সাড়ে তিনশ মনোনয়নপত্র কিনেছেন প্রার্থীরা। আমরা এর মধ্যে থেকে সিনিয়র বা যারা জনপ্রিয় এমন ৮২ জনকে মনোনয়ন দিয়েছি। এর মধ্যে বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচিত ১৫ জন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর এলাকায় আসলাম। এসে আমি মানুষের ভালোবাসায় অভিভূত হয়েছি। যখন বিএনপি করতাম আলফাডাঙ্গায় আসলে কোনো লোকই পেতাম না। এবার এসে মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। বোয়ালমারী ও মধুখালীতেও একই অবস্থা। হাজারো মানুষ আমাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। তিন উপজেলার মানুষ আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছে তাতে আমি অভিভূত।’
শাহ জাফর বলেন, ‘মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। ২০১৪ সালে এবং ২০২৮ সালে এলাকার মানুষ ভোট দিতে পারলে আমিই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতাম। এইবার মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। ‘আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দিব’ এই সুযোগ এবার পাচ্ছে জনগণ। সেকারণে আমি আশা করছি মানুষ যেভাবে আমাকে গ্রহণ করেছে, তাদের হৃদয়ে আমি যেভাবে রয়েছি তাতে করে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবার আমাকে মানুষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।’
নির্বাচন সুষ্ঠু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেভাবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনসহ দেশ বিদেশের প্রতিনিধিরা বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে হবে তাতে আমি আশা করছি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আমাদের কাছেও বিভিন্ন জায়গা থেকে ম্যাসেজ আসছে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে।’
শাহ জাফর বলেন, ‘আমাদের প্রতীক নোঙর। ফরিদপুর-১ আসনের জনগণসহ দেশবাসীর কাছে আমার প্রত্যাশা আমাদের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। দেশে অন্যায়-অবিচার, শোষণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য নোঙর প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার আহবান জানাই দেশবাসীকে।’
তিনি বলেন, ‘হাজারো মানুষ আমাকে ভালোবেসে এসেছে। নির্বাচনী আচরণবিধি হয়তো লঙ্ঘন হয়েছে। আমি এর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার আমি ঠেকাতে পারিনি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২৬ প্রার্থী।’
এর মধ্যে ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসন থেকে সাত জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি মো. আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর, জাতীয় পার্টির আকতারুজ্জামান খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির নুর ইসলাম শিকদার, জাকের পার্টির আব্দুর রউফ মোল্যা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক।
মন্তব্য করুনঃ