স্পোর্টস ডেস্ক:
টসে জিতে সাকিব আল হাসান বোলিং নিয়েছিলেন পেসারদের কথা ভেবে। টসের সময় বলেছিলেন, এই মাঠে শুরুতে পেসাররা সুবিধা পাবে। কিন্তু, শুরুর আট ওভারে সাকিবের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করেছে আফগানিস্তান ব্যাটাররা। নবম ওভারে আক্রমণে আসেন সাকিব। দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন তিনিই। আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে ডিপ স্কয়ার লেগে তানজিদ তামিমের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসান সাকিব। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। সাকিব-মিরাজের স্পিন ঘূর্ণি সঙ্গে তাসকিন-শরিফুলদের পেস আক্রমণ, দুই বিভাগ মিলে আফগানিস্তানকে অল্পতেই আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৭.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান তোলে আফগানিস্তান। সমান তিনটি করে উইকেট নিয়ে আফগানদের থামানোর মূল নায়ক সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামা আফগানরা শুরুটা করে ঝড়ো গতিতে। সাকিব বোলিংয়ে আসার আগ পর্যন্ত দুই ওপেনার রহমতউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান মিলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন। জাদরান আউট হন ২২ রান করে। ম্যাচের দ্বিতীয় শিকারও সাকিবের। মিড অফে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রহমত শাহ (১৮)। ধর্মশালার পিচ মাঝের ওভারগুলোতে স্পিন সহায়ক হয়ে ওঠে। সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজকে দেখেশুনে খেলছিলেন গুরবাজ ও আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। বেশিক্ষণ প্রতিরোধ ধরে রাখতে পারেননি শহীদি। ১৮ রান করে মিরাজের বলে তাওহিদ হৃদয়ের তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
ম্যাচে পেসাররা প্রথম সাফল্য পান মুস্তাফিজুর রহমানের হাত ধরে। ক্রিজে থিতু হয়ে যাওয়া রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফেরান মুস্তাফিজ। ৬২ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৭ রান করে তামিমের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ১১২ রানে চার উইকেট হারানো আফগানরা এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেননি। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে (৫) বোল্ড করে দলকে পঞ্চম সাফল্য এনে দেন সাকিব। আফগানদের অন্যতম ভরসা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীও (৬) থিতু হতে পারেননি। তাকে বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ।
বাংলাদেশি বোলারদের বল যেন বুঝে উঠতেই পারছিলেন না আফগান ব্যাটাররা। ৯ রান করে মিরাজের বলে বোল্ড হন রশিদ খান। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করা আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে বোল্ড করে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম উইকেট পান পেসার শরিফুল ইসলাম। ২০ বলে ২২ রান করেন ওমর।
মুজিব উর রহমানও ভ্রান্ত হন মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে। তাকেও বোল্ড করেন মিরাজ। শুরুতে বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় আফগানরা। বাংলাদেশিদের বোলিং তোপে ১২.৪ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় তারা।
বাংলাদেশের পক্ষে তিনটি করে উইকেট শিকার করেন সাকিব ও মিরাজ। সাকিব ৩০ রানে তিনটি এবং মিরাজ ২৫ রানে নেন তিন উইকেট। শরিফুল নেন দুই উইকেট। তাসকিন ও মুস্তাফিজ পান একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ৩৭.২ ওভারে ১৫৬/১০। (গুরবাজ ৪৭, জাদরান ২২, রহমত ১৮, শহীদি ১৮, নাজিবুল্লাহ ৫, নবী ৬, ওমর ২২, রশিদ ৯, মুজিব ১, নাভিন ০, ফারুকি ০*; তাসকিন ৬-০-৩২-১, শরিফুল ৬.২-১-৩৪-২, মুস্তাফিজ ৭-১-২৮-১, সাকিব ৮-০-৩০-৩, মিরাজ ৯-৩-২৫-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৭-০)।
মন্তব্য করুনঃ