মোঃ আলফু মিয়া, হবিগঞ্জ:
কথায় বলে, সবার ওপরে মানুষে মানুষ সত্য তাহার ওপরে নাই। কিন্তু এ যেন অমানবিকতার শেষ পর্যায়। মানবতার গালভারি বুলি যেনো খাতাকলমে বন্দি। শেষকৃত্যের জন্য একটু মাটি জুটলো না পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর। গ্রাম্য মাতব্বরদের বাধায় শ্মশানে সমাধি দিতে না পেরে মরদেহ বস্তায় ভরে ভাসিয়ে দেয়া হলো নদীতে।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে ঘটেছে এমনই এক অমানবিক ঘটনা। গত ২৯ জুন শনিবার, ফুটবল খেলা শেষে পুকুরে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা যায় দুই শিশু প্রলয় দাস ও সুর্য দাস। সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী মরদেহ দাহ করা হয়। তবে শিশুদের বেলায় তা দাহ না করে সমাধি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। ওইদিন বিকেলেই শিশুদের মরদেহ সমাহিত করা হয় শ্মশানে। এতে বাদ সাধেন পঞ্চায়েত নেতারা। নির্দেশ দেয়া হয় শ্মশান থেকে লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিতে। শত অনুরোধ আর পায়ে ধরে কান্নাকাটিতেও মন গলেনি মাতব্বরদের। একপর্যায়ে মাতব্বরদের চাপের মুখে সন্তানদের মরদেহ সমাধি থেকে তুলতে বাধ্য হন হতভাগ্য বাবা। পরে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয় কালনী নদীতে।
বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে গত ৩ জুলাই আজমিরীগঞ্জ চৌকি আদালতের বিচারক সোহেল ভূঁইয়া স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করে, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে আজমিরীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। মামলাও হয়েছে থানায়। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানাচ্ছেন এই কর্মকর্তা।
তবে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্তরা। অমানবিক এ ঘটনায় অবিলম্বে বিচারের আসবে জড়িতরা, এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
মন্তব্য করুনঃ