ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈইমারি বলেছেন, শেখ হাসিনা দেবীতূল্য মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। সংগ্রামের পর বাংলাদেশ যেভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগিয়েছে সেটা অনন্য উদাহরণ। উন্নতির জন্য বাংলাদেশ কী কী করেছেন সেটা দেখে গেলাম।
সোমবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের আসাম রাজ্যের বিধানসভার স্পিকারের নেতৃত্বে ৩৩ জন বিধায়কসহ ৬২জনের প্রতিনিধি দলটি ৪ দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ফিরে যাওয়ার সময় আখাউড়া আন্তজার্তিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
এ সময় স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈইমারি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা হয়েছে। উনার কাছ থেকে অনেক কিছু জানলাম, শুনলাম। দুই দেশের অর্থনীতি উন্নয়ন, শিক্ষা, কর্মসংস্থানের জন্য কী কী করা যায়। সে ব্যপারে আলোচনা হয়েছে এবং তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে আসামের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
দৈইমারি আরও বলেন, ৭৫ বছর আগে বাংলাদেশ ও আসামের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল, আমি সেটি ফিরিয়ে আনতে চাই। আশা করি, আমরা সে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবো।
স্পিকার দৈইমারি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মিজোরামের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত গতিতে শেষ করা হবে। ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বে থাকা রাজ্যগুলোর সঙ্গে বর্ধিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শুধু উত্তর-পূর্বের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে না; বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃদ্ধিতেও সাহায্য নিয়ে আসবে। এ সময় আসাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি আনার কনস্ট্রাকশন কাজ চলছে বলেও জানান স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈইমারি।
এনআরসি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দৈইমারি বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
তবে দৈইমারি জানান, আসামের মুসলিমদের বিষয়ে বাইরে থেকে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেন। কিন্তু আসামের মুসলিমরা অনেক ভালো আছেন। আমার সঙ্গেও রাজ্যের অনেক মুসলিম বিধায়ক বাংলাদেশ সফরে আছেন।
প্রসঙ্গত, আসাম রাজ্যের বিধায়ক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈইমারি ঢাকায় সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে সড়ক পথে ঢাকা থেকে প্রতিনিধি দলটি সন্ধ্যায় আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে এসে পৌঁছলে তাদেরকে ফুল দিয়ে অর্ভথ্যনা জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রণয় চাকমা। এ সময় ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, আসামের গুয়াহাটি বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন থেকে সদ্য বিদায়ী সহকারী হাইকমিশনার ড. তানভীর মনসুর রনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা, আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম, ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ দেওয়ান মোরশেদুল হক রিপন প্রমুখ।
মন্তব্য করুনঃ