দেশের আর দশজন নাগরিকের মত নেই তাদের মৌলিক কোনো অধিকার। আমরা যে এত ইসলামের কথা বলি, আমাদের দেশে ইসলামি মূল্যবোধগুলো এভাবে বিনষ্ট হতে দেখি তাতে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা হয় না। চা শ্রমিকরা মাত্র তিনশ টাকা মজুরির জন্য আন্দোলন করছে, একবার ভেবে দেখেছেন, কত কম তাদের চাওয়া? কত স্বল্পতে তারা তুষ্ট? এখানেও অনেকে পাচ্ছে ষড়যন্ত্রের গন্ধ। অনেকেই মন্তব্য করছেন, চা শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য এই আন্দোলন দাঁড় করানো হয়েছে। সত্যি দুঃখজনক, লাখ লাখ শ্রমিককে বছরের পর বছর গোলামের মত খাটিয়ে যদি এই শিল্প দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় তাহলে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না।
প্রতিটি নাগরিকের অধিকার আছে সুস্থ সুন্দরভাবে বাঁচার। ইসলাম সাম্যের কথা বলে, অধিকারের কথা বলে। স্বাধীন মানুষকে দাস বানিয়ে রাখা ইসলামে কোনোভাবেই সমর্থিত নয়। আজ থেকে ১৪শ’ বছর আগে প্রিয় নবীর একান্ত ঘনিষ্ঠ সাহাবি ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর তার ঐতিহাসিক উক্তিটি করেছিলেন, কবে থেকে তোমরা মানুষকে দাস বানিয়ে রাখা শুরু করলে, অথচ তাদের মায়েরা তাদেরকে স্বাধীনভাবেই প্রসব করেছে। জন্মেছে স্বাধীনভাবে, এই স্বাধীনতা তার মৌলিক অধিকার। অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থান প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার, ইসলামে এই মৌলিক অধিকার রক্ষার নির্দেশ রয়েছে। চা শ্রমিকরা অধিকাংশই হিন্দু বা খৃস্টান, এ জন্যই কি আমাদের এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই? অথচ মৌলিক অধিকার কেবল মুসলিমদের জন্য নয়, মুসলিম অমুসলিম ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের এই সুরক্ষা অধিকার রয়েছে।
নিপীড়িত মানুষের বন্ধু ইসলাম। পৃথিবীর আর কোনো মতাদর্শ এর চেয়ে বেশি সম্মান দেয়নি দিনমজুরদের। মালিক ও মজুরে কোনো তফাৎ নেই ইসলামে। মালিকের যেমন সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকার আছে মজুরেরও আছে স্বাধীন সত্ত্বা লাভের অধিকার। শোষণ ও নিপীড়নের পথ বন্ধ করতে চায় ইসলাম। দুর্বলকে পিষে খতম করার জঘন্য প্রবণতা দূর করতে চায় ইসলাম।
মন্তব্য করুনঃ