গাজীপুরে জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কে রাতে তাকওয়া পরিবহনসহ জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক কোনো পরিবহন চালানো হবে না বলে জানিয়েছেন জেলার পরিবহন ও শ্রমিক নেতারা। রাতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। গত ৯ আগস্ট থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।
রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় জেলার শ্রীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
সড়ক-মহাসড়কে বাসে ডাকাতি, দস্যুতা, ছিনতাই ও ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় সংক্রান্তে পরিবহন মালিক, চালক-সহকারী ও শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মাওনা হাইওয়ে থানা।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, সার্জেন্ট শিবু নাথ সরকার, সাংবাদিক আব্দুল মালেক, সাংবাদিক মো. জামাল উদ্দিন, শ্রমিকলীগ নেতা মুজিবুর রহমান, মো. জালাল উদ্দিন, ফরিদ আহমেদ, শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল মাহমুদ আসিফ, গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যকরি কমিটির সহসভাপতি আবুল হোসেন পালোয়ান ও হাজি মো. হারেছ উদ্দিন প্রমুখ।
গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যকরি কমিটির সভাপতি মো. ইমান আলী তার বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি তাকওয়া পরিবহনে ছিনতাই ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা গাজীপুরের পরিবহন ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। এটা পরিবহন সেক্টরের জন্য লজ্জাজনক। এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তাই সব চালক ও হেলপারের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ ছাড়া রাত ১১টার পর গাজীপুরের আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে তাকওয়া পরিবহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রতিদিন রাতে শ্রমিক নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত দুটি টিম ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তদারকি করছে। সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা রাতে পরিবহন চালাবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যকরি কমিটির সভাপতি সুলতান উদ্দিন আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা রাত ১১টার পর থেকে গাজীপুরের সড়ক-মহাসড়কে জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে মানুষের কোনো ঝুঁকি না থাকে, গাড়িতে ডাকাতি না হয়, ধর্ষণ, অসদাচরণ না হয়। সাংগঠনিক এ সিদ্ধান্ত আমরা গত পাঁচদিন ধরে বেশ গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করে আসছি।
রাতে জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক পরিবহন চলাচল বন্ধে একটি মোবাইল টিম গঠন করে দিয়েছি। মোবাইল টিম দুটি মাইক্রোবাসে করে সার্বক্ষণিক টহল দিতে থাকে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গাতে পাহারাদার নিয়োগ করা হয়েছে। এটা আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত।
সিদ্ধান্ত না মেনে যে গাড়িগুলো চলবে তাদেরকে আমাদের লোকেরা আটক করে নির্দিষ্ট ডাম্পিং পয়েন্টে নিয়ে আটকে রাখবে। পরদিন ওই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে চালককে সাসপেন্ড করা হবে।
তিনি আরও জানান, লাইসেন্সের তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র, স্থায়ী ও বর্তমান তথ্য সম্বলিত একটি ডাটাবেস গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক তাকওয়া পরিবহনে জিপিএস ট্যাকার লাগানো আছে, গাড়িটি কোথায়, কখন, কীভাবে যাচ্ছে, কোন সড়ক ধরে চলাচল করছে তার বিস্তারিত জিপিএস ট্যাকারের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুনঃ