চ্যানেল এস ডেস্ক:
রাজধানীর কলাবাগানে নৃশংস নির্যাতনে শিশু গৃহকর্মী হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত পলাতক গৃহকর্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কলাবাগান থানা।
গ্রেফতারকৃতের নাম মোছাঃ সাথী আক্তার পারভীন ডলি। গতকাল শনিবার যশোর থেকে তাকে গ্রেফতার করে কলাবাগান থানার একটি টিম।
আজ রবিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এবিষয়ে বিস্তারিত জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, পিপিএম।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ২৬ আগস্ট কলাবাগান থানার সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসা থেকে পুলিশ একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করে। নিহত শিশুর নাম হেনা। তার বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়। পিতা-মাতাহীন হেনাকে তিন বছর আগে ঢাকায় নিয়ে আসেন সাথী আক্তার। ভিকটিমের আত্মীয়স্বজনের আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় কলাবাগান থানা পুলিশের সহায়তায় লাশ দাফনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ আগস্ট রাতে কলাবাগান থানার সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসায় গৃহকর্ত্রী মোছাঃ সাথী পারভীন ডলি তার গৃহকর্মীকে নৃশংসভাবে শারীরিক নিযার্তন করে হত্যা করে। লাশ বিছানার উপরে ফেলে রেখে পরদিন সকালে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কলাবাগান থানায় মামলা রুজু করা হয়। কলাবাগান থানা পুলিশের একাধিক টিম সাথীকে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতারের চেষ্টা করে। কিন্তু সাথীর কাছে কোন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় তিন শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচানায় তাকে বিভিন্ন সময় ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে কখনও রিক্সায় কখনও পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে দেখা যায়। এছাড়াও পথচারীর মোবাইল ফোন ব্যবহার করেও কথা বলতে দেখা যায়। পরবর্তীতে যশোর জেলার কোতয়ালী থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত সাথী ভিকটিম হেনাকে বাসায় আনার পর থেকেই প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করতো। নির্যাতনের কারণে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা, পোড়া ও রক্তাক্ত জখম হয়। ভিকটিমকে তার আত্মীয়স্বজনদের সাথে কখনো দেখা কিংবা মোবাইল ফোনে কথা বলতে দিত না। ঘটনার দিন ভিকটিম হেনার গলায় এবং মুখ চেপে রেখে নির্যাতন করায় মারা যায় বলে স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত গৃকর্ত্রী সাথী আক্তার।
হত্যার কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, শিশুটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে নির্যাতন করা হয়েছে। বাচ্চার খাবার খাওয়ায় শিশুটিকে নির্যাতন করে সাথী। অনেক সময় তার বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলার সময় মারামারি হলে সেটা দেখেও নির্যাতন করতেন গৃহকত্রী।
গ্রেফতারকৃত সাথী আক্তারকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানানো হয় ব্রিফিংয়ে।
মন্তব্য করুনঃ