নোয়াখালী সদর উপজেলায় এক গৃহবধূকে (২৫) ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ ও অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারণের অভিযোগে মেহেদী হাসান ওরফে রাজু (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।  রোববার দুপুরে শহরের পৌর পার্ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন জব্দ করেছে পুলিশ।

ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান সদর উপজেলার পশ্চিম এওজবালিয়া গ্রামের আবু হোসেনের ছেলে। গ্রেপ্তারের পর ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে সুধারাম থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন।

ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ওই নারীর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পর তাঁর স্বামী বিদেশে চলে যান। এর কয়েক মাস পর তাঁর আত্মীয় মেহেদী হাসান তাঁর শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতে তিনি (মেহেদী) শ্বশুরবাড়ির সবাইকে কোমলপানীয় পান করান। এরপর ঘুমের মধ্যে ওই গৃহবধূর কিছু অশ্লীল ছবি মুঠোফোনে তুলে রাখেন। এ ঘটনার কয়েক দিন পর মেহেদী বাড়িতে ফিরে ওই গৃহবধূকে অশ্লীল ছবি দেখিয়ে নানা ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর অভিযোগ, মেহেদী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাঁকে কৌশলে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর রাজ বিলাস নামের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ গত ২১ জুলাই তাঁকে একই হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি তুলে রাখেন। এরপর মেহেদী তাঁর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বজায় না রাখলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধুর মুঠোফোনে সেটা শেয়ার করেন।

জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূর প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুপুর ১২টার দিকে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে শহরের পৌর পার্ক থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ফোনে গৃহবধূর অশ্লীল ভিডিও চিত্র পাওয়া গেছে।

ওসি নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, গ্রেপ্তার যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুধারাম থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে সুধারাম থানায় একটি মামলা করেছেন। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।