মফস্বল ডেস্ক :
স্কুলের চারতলার নির্জন কক্ষে নিয়ে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মেহেদি হাসান তুষার নামে এক শরীর চর্চা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হলে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তার অপসারণ দাবি করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার লতিবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শরীরচর্চার শিক্ষক তুষারের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগ জানালে স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা শরীরচর্চার শিক্ষক মেহেদী হাসানকে বহুদিন আগে থেকেই এড়িয়ে চলে। কারণ তিনি সুযোগ পেলেই স্নেহ করার নামে নানা কৌশলে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে থাকেন। এ বিষয়টি প্রায় সকল ছাত্রীদের কাছে “ওপেন সিক্রেট” বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ওই শিক্ষক। স্কুল ছুটির আগে ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে বিদ্যালয়ের চারতলায় একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে যান তিনি। সেখানে ধস্তাধস্তি এবং ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে রক্ষা পায়।
অপরদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক আর বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না। তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। শরীরচর্চার শিক্ষক তুষার সদর উপজেলার প্যারাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীর বাবার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক করে। বৈঠকে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়। তদন্ত কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক এ কে এম আতিকুর রহমান জানান, তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণের বিষয়টি জানেন না। তবে গত ১ মার্চ এক ছাত্রীর বাবা তার মেয়েকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে মর্মে একটি অভিযোগ করেছেন শরীরচর্চা শিক্ষক মেহেদী হাসান তুষারের বিরুদ্ধে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা গণমাধ্যমকে জানান, বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ে পরিবারকে সবকিছু বলেছে। এ ধরনের ঘটনা যেন আর বিদ্যালয়ে না ঘটে এ জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়টির বেশ ক’জন ছাত্রী জানায়, শরীরচর্চা শিক্ষক কথায় কথায় তাদের গায়ে হাত দেয়। তারা অনেক সময় আপত্তি করলেও তিনি শুনেন না। আদর করার নামে এসব বাজে আচরণ করেই যাচ্ছেন তিনি।
ঘটনা সম্পর্ক কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ বলেন, যৌন নির্যাতনের ঘটনার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুনঃ