মফস্বল ডেস্ক :
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বধূ সেজে বিয়ের আসরে কনে অপেক্ষা করছিলেন বরের জন্য। কিন্তু দিনভর অপেক্ষার পরও বর না আসায় বিয়ে হয়নি।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ফুলবাড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য তোফায়েল আহমেদ লিটন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কনে ও কনের বাবা খুবই ভেঙে পড়েছেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ওমর ফারুকের ছেলে মো. হুসাইন। তিনি বর্তমানে বরিশাল লেবুখালী সেনানিবাসে সেনা সদস্য হিসেবে কর্মরত।
কনের মামা সাজ্জাদ হোসেন জানান, দুই পরিবারের দেখাশোনা সম্পন্নের পর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। হুসাইন ও তার পরিবারের সিদ্ধান্তেই গত রোববার নির্ধারিত দিন ছিল বিয়ের। দেনমোহরও ধার্য হয় ৭৫ হাজার টাকা। এর দুদিন আগে ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যরা কনেকে নাকের নথ পরিয়ে দিয়ে আসেন। রোববার ২০ থেকে ২৫ জন বরযাত্রীসহ বর আসার কথা কনের বাড়িতে। সব আয়োজন সম্পন্ন করে প্রতীক্ষায় ছিল কনের পরিবার। পরে বিকেলে জানা যায়, বর আসবে না।
সাজ্জাদ আরও জানান, বিয়েতে যদি মত না-ই থাকে, তাহলে ছেলে নিজ থেকেই আমার ভাগ্নিকে দুইবার কেন দেখতে এলো? এ ছাড়া শুনেছি ছেলে তার নিজ কর্মস্থলে উল্টো মেয়ের পরিবার ও নিজের বাবার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে। এরপর আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সম্প্রতি ছেলের বাবা বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। পরে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হুসাইন বিভিন্ন গ্রামে মেয়ে দেখতে শুরু করে। এক মাসে তারা ১৫ থেকে ১৮ স্থানে মেয়ে দেখেন। তবে সে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমার ভাগ্নি জীবন নিয়ে খেলা করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও লড়ব।
তিনি আরও জানান, যাবতীয় প্রমাণাদিসহ তার কর্মস্থলে যাব। মেয়ের বাবা একজন অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি তার শেষ সম্বল দুটি গাভী বিক্রি করে মেয়ের সুখের জন্য ছেলের দাবিকৃত মেয়ের সোনার গহনা ও হবু জামাইয়ের জন্য একটা পালসার মোটরসাইকেল দিতে রাজি হন। এ অবস্থায় কনে ও তার বাবা খুবই ভেঙে পড়েছেন। দুই থেকে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফুলবাড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য তোফায়েল আহমেদ লিটন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা মোটেও ঠিক হয়নি। জেনেছি কর্মস্থল থেকে বিয়ের অনুমতি ছিল না ছেলের। তারপরও পরিবারের সঙ্গে নিজেই দেখাশোনা করে বিয়ের দিন ঠিক করেছেন। এখন উধাও হওয়ায় ঘটনা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে একটা মেয়ে ও তার পরিবারের কী পরিমাণ কষ্ট হয়, সেটা আমরা বুঝি। কেন এমন হলো বিস্তারিত জানতে ছেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলব।
মন্তব্য করুনঃ