চ্যানেল এস ডেস্ক:
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবে আগামীকাল রোববার ভোর ৬টা থেকে। যদিও শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই সেই অবরোধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে রাজধানীর নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও সায়েদাবাদে তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব আগুন কে বা কারা দিয়েছে তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, অবরোধের সমর্থনেই বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য এসব আগুনে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার বলেন, সন্ধ্যার পর আমাদের কাছে এলিফ্যান্ট রোড ও নিউমার্কেট এলাকায় পৃথক দুটি পাশে অগ্নিসংযোগের খবর আসে। রাত ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মিরপুর লিংক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুনের খবর পেয়ে ৭টা ৪০ মিনিটে ঘটনাস্থলে যায় সার্ভিসের দুটি ইউনিট। পলাশী ব্যারাক ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট কাজ করে ইতোমধ্যে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
তিনি বলেন, ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সিটি সেন্টারের সামনে গ্রিন ইউনিভার্সিটির একটি বাসে আগুনের খবর পাই। সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৭টা ৪৩ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, রাত ৮টার দিকে খবর আসে রাজধানীর সায়েদাবাদ ফ্লাইওভারের নিচে জনপথ মোড়ে একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। খবর পেয়ে পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। কে বা কারা ওই বাসে আগুন দিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। বাসটি কোন পরিবহনের তাৎক্ষণিকভাবে তাও জানা যায়নি।
উল্লেখ্য সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তাদের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করবে। পাশাপাশি জমায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিনদিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে বিএনপি ও এর শরিকরা।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করলে এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও উপুর্যুপরি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয়। এরপর সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালানো হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এদিকে, হরতালের দিন এবং পরবর্তী কয়েকদিনে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মন্তব্য করুনঃ